Saturday, November 5, 2022

ট্রেডিং সাইকোলজি - ১ টি ক্লাস।

   ট্রেডিং সাইকোলজি - ১ টি ক্লাস।  

আমরা অনেকে ভালো টেকনিক্যাল এনালাইসিস জানি কিন্তু ট্রেডিং সাইকোলজিটা ভালোভাবে বুঝতে পারিনা যার জন্য আমাদের টেকনিক্যাল এনালাইসিস ভালো ভাবে জানা সত্ত্বেও আমরা মার্কেট থেকে ভালো প্রফিট নিতে পারি না। আমাদের এনালাইসিস, এন্ট্রি এবং এক্সিটের পাশাপাশি আমাদের ট্রেডিং সাইকোলোজিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। কারন আমরা অনেক সময় আমাদের হাতে থাকা শেয়ার নিচে নামতে থাকলে সাপোর্ট জোনে ভয় পেয়ে সেল করে দিয়ে থাকি। আবার আমাদের হাতে থাকা শেয়ার যখন বাড়তে থাকে তখন ভয় পেয়ে ব্রেকআউট লেভেলে সেল করে দিয়ে থাকি। একটি শেয়ারের সাপোর্ট এবং ব্রেকআউট লেভেলে ভয় না পেয়ে আমরা যদি একটু সাহস এবং ধর্য্য নিয়ে কিছু দিন অতিবাহিত করতে পারি তা হলে আমাদের সফলতার হার আরো ২০% বৃদ্বি পাবে। ইনশাআল্লাহ।


একজন সফল ট্রেডারের সাইকোলজি এবং আচরণ কেমন হয়ে থাকে

১. ধর্য্য
২. আত্মবিশ্বাস
৩. ডিসিপ্লিন
৪. ইমোশানলেস ট্রেডিং
৫. আত্মনিয়ন্ত্রণ বা সেলফ-কন্ট্রোল
৬. বিনা ভয়ে ট্রেড করা
৭. প্রতিদিন সতেজ থাকা
৮. রিস্ক ম্যানেজমেন্ট
৯. মানি ম্যানেজমেন্ট
১০. রিস্ক টু রিওয়ার্ড
১০. লোভী না হওয়া
১১. নিরাশ না হওয়া
১২. বাস্তববাদী হওয়া
১৩. নিজের ভুল স্বীকার করা
১৪. লসকে হজম করার ক্ষমতা
১৫. প্রতিদিন এনালাইসিস
১৬. পিছনে ফিরে না তাকানো
১৭. লাভের পর সাময়িক ছুটি নেওয়া

ট্রেডিং সাইকোলজি অনুসারে একজন অসফল ট্রেডার যে ভুল গুলি বার বার করতে থাকে। যার কারনে একজন ট্রেডার সফল হতে পারে না।
১. ট্রেডিং জ্ঞান না থাকা
২. ট্রেডিং কে গ্যাম্বলিং মনে করা
৩. ইমোশনাল ট্রেডিং করা
৪. ট্রেডিং ফোমো বা ট্রেড মিস করার ভয়
৫. ওভার এনালাইসিস করা
৬. ওভার ট্রেডিং করা
৭. বিনা স্টপ লসে ট্রেডিং করা
৮. এভারেজিং করা
৯. একসাথে অনেক বেশি পরিমান শেয়ার ট্রেড করা


আমরা অনেকে অনেক রকম ট্রেডিং স্ট্রেটেজি পারি এবং অনেক টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর কোর্স করে অনেক রকম ইন্ডিকেটর এর বেবহার করি। কিন্তু মার্কেটে সফল হতে পারছি না।  বা প্রফিট করতে পারছি না।  এর প্রধান কারণ হল আমরা ট্রেডিং সাইকোলজি জানি না।  ট্রেডিং সাইকোলজি হলো ট্রেডিং মনোবিজ্ঞান।  যখন আমরা ট্রেডিং করি তখন আমাদের মাইন্ডসেট কি। থিঙ্কিং ইমোশান কি হয়। ট্রেডিং এর সময় আমরা কি ইমোশনালি এবং মেন্টালি স্ট্রং থাকি। আমরা কি ভয় এবং লোভে ট্রেড থেকে বের হয়ে যাই। ট্রেডিং সাইকোলজি দ্বারা আমরা ট্রেডারের বিহেভিয়র কে বুজতে পারি। আমার ট্রেডারের ইমোশন কে বুজার চেষ্টা করি। ট্রেডারের মাইন্ডসেট কিভাবে বদলায় তা বুজতে পারি। যে টেকনিকে কিছু  ট্রেডারের মানসিক ইস্থিতিকে বুঝার চেষ্টা করি তাকে ট্রেডিং সাইকোলজি বলে।  ট্রেডিং সাইকোলজির বিহেভিয়ার বা মানসিক অবস্থা বুঝানোর বুঝা যায় তাকে ট্রেনিং সাইকোলজি বলা হয়। একে ট্রেডিংয়ের মনোবিজ্ঞান বলা হয়।  ট্রেডিং এ সফল হবার জন্য 90% ট্রেডিং সাইকোলজি আর ১০% টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর অবদান থাকে । ট্রেডিং সাইকোলজির দ্বারা আমরা একজন  প্রফেশনাল ট্রেডারের মত ট্রেড করতে পারব। 

১. যখন আপনার লস হয় তখন আপনার মনের অবস্থা কেমন হয় ?

২. আপনার কি মনে হয় আপনি যে ট্রেড এ নেন না কেন আপনার লস হবে ?

৩. স্টপ লস লাগানোর পর ও সব সময় আপনার লস হয় বা অন্যের সিদ্বান্ত নেবার পর ও আপনার লস হয়?

৪. আপনার প্রফিট হজম হয় না বা আপনি যখন প্রফিট হচ্ছে তখন ট্রেড বন্ধ করে দেন ? আপনার মনে হয় ছোট প্রফিট ভালো প্রফিট। 

৫. আপনি কি মার্কেট ট্রেন্ড ধরতে কঠিন মনে হয় ?

৬. আপনার ট্রেড করতে কি অন্যের সাহায্য নিতে হয় ?

৭. ট্রেড করার  নিজের  উপর   রাগ , ক্ষোভ বা আনন্দ অনুভব করেন  ?

৮. আপনার কি মনে হয় বাজারের সাথে আপনার কেন শত্রুতা আছে।  যখন আপনি কেন শেয়ার কিনেন তখন বাজার নিচে যেতে থাকে। আর যখন আপনি কেন শেয়ার বিক্রি করেন তখন বাজার নিচে যেতে থাকে।  

৯. আপনার কি মনে হয় ডাইরেকশন বুলিশ মার্কেট কোথায় যাবে তার অনুমান করা কঠিন। 

১০. আপনি কি কখনো খুশিতে , রাগে,  ভয়ে বা জোশে কোন  ট্রেড নেন ?

১১. কখনো আপনার সম্পূন একাউন্ট লসে গেছে।  যদি উত্তর হা হয় তা হলে আপনার প্রথম প্রতিকক্রিয়া কি হয় ?

এ পোষণ গুলির উত্তর পাবার পর আমরা আমাদের ট্রেডিং মাইন্ডসেট কে ঠিক করতে হবে। 

যে লোক ট্রেড এর মধ্যে আছে সে তার ট্রেড নিয়ে চিন্তিত /আনন্দিত/ ভয়ে থাকে। এটি এটা থাকা স্বাভাবিক। কারন আপনি টাকা লাগিয়েছেন আপনার এগুলি থাকতেই পারে। ট্রেডিং সাইকোলজি আপনাকে এ গুলি থেকে মুক্তি দিতে পারে। যাতে আপনি ভয় বিহীন হয়ে মার্কেটে ট্রেড নিতে পারবেন। যদি আপনি বাজারে ভয় বিহীন কাজ করতে চান তাহলে আপনাকে মানতে হবে লস করা বাজারের একটি অংশ। আমাদেরকে বুজতে হবে আমাদের প্রতিটি ট্রেড প্রফিট হবে না এবং এটা হওয়া সম্বব ও না।  মার্কেটে আপনি ট্রেড করলে প্রফিট হবে আবার লস হবে এটাই নিয়ম।  ট্রেডিং সাইকোলজির মাধ্যমে আপনি আপনার ট্রেডকে গেইন পিসিবিলিটিকে ৮০:২০ তে রূপান্তরিত করতে পারবেন। মাইন্ডসেট পজিটিভ ট্রেডিং থাকলে বা পজিটিভ থিংকিং থাকলে আপনি সফল হবার চান্স ৮০%। এতে করে আপনার ট্রেডিং একুরিচি বেড়ে যাবে।  টেকনিক্যাল এনালাইসিস দ্বারা  চার্ট রিড করা শিখা  হয়  আর সাইকোলজিকাল এনালাইসিস দ্বারা বাজারের ইমোশনকে কন্ট্রোল করা শিখা হয়।  যখন একজন ট্রেডার সাইকোলজিকাল এনালাইসিস শিখে যায় তখন সে একজন ডিসিপ্লিন ট্রেডারে পরিণত হয়। ট্রেডিংয়ে  ডিসিপ্লিন খুবই জরুরি। শেয়ার বাজারে ৯০% লোক লস করে আর ১০% লোক প্রফিট করে।  এ ১০% সফল ট্রেডার ঐ লোক যে টেকনিক্যাল এনালাইসিস  এবং সাইকোলজিকাল এনালাইসিস কে যথাযত ভাবে কাজে লাগায় বা অনুসরণ করে।  অনেক ট্রেডার আছেন যারা অনুমান করেন মার্কেট এখানে যাবে বা মার্কেট আরো উপরে যাবে। এ মার্কেটে অনুমানের কোন মূল্য নাই। অনুমান নয় চার্ট দেখে ট্রেড সিদ্দান্ত  নিতে হবে। চার্টে কোন প্যাটার্ন দেখা যাচ্ছে। চার্টে কোথায় বরকত হচ্ছে বা হবে। চার্টে এখন কোন ট্রেন্ড চলছে। একজন সফল ট্রেডারকে চার্টের কথা শুনে ট্রেড করা উচিত। অনুমান করে বা ইমোশনকে শুনে ট্রেড নয়।  যদি চার্ট ফলো করে চলা হয় তাহলে মার্কেটের সাথে সাথে চলা হয়।  আমাদের মাইন্ডসেট  মার্কেট সবসময় বুল থাকবে অথবা সবসময় বিয়ার থাকবে এ ধারনা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। সফল ট্রেডার সব সময় বুল হলে বুলের সাথে চলে আবার বিয়ার হলে বিয়ারের সাথে চলে। সফল ট্রেডের সব সময় ট্রেন্ড এর সাথে চলে কারন ট্রেন্ড ইজ ইওর বেস্ট ফ্রেন্ড। সফল বড় গুন হল  ট্রেডের বুল মার্কেটে বুল মাইন্ডসেট নিয়ে চলে  আর বিয়ার মার্কেটে বিয়ার মাইন্ডসেট নিয়ে চলে।  একজন সফল ট্রেডার বুল এবং বিয়ার দুটাকেই শিকার করে। সে একজন সিংহ 

ট্রেডিং সাইকোলজি কোন বাই /সেল সিগন্যাল প্রদান করে না। ট্রেডিং সাইকোলজি একটি ট্রেড নিবার আগে ও পরে আপনার মাইন্ডসেট কেমন হতে হবে। আপনার থিংকিং প্রসেস কেমন হবে।   ট্রেডিং সাইকোলজি আপনাকে শিখাবে মার্কেটে যে অসফল ট্রেডার তার মাইন্ডসেট কেমন। মার্কেটে যে সফল ট্রেডার তার মাইন্ডসেট থিংকিং প্রসেস কেমন।  টেকনিক্যাল এনালাইসিসে তো অনেক কিছু শিখেছি কিন্ত মার্কেটে কি কি ভুল করেছি তা  ট্রেডিং সাইকোলজি দ্বারা বুজতে পারব। 

অসফল ট্রেডারের সাইকোলজি এবং বিহেবিওর কেমন হয় 

ট্রেডিং সাইকোলজি অনুসারে একজন অসফল ট্রেডার যে ভুল গুলি বার বার করতে থাকে। যার কারনে একজন ট্রেডার সফল হতে পারে না। 

১. ট্রেডিং জ্ঞান না থাকা: 

কেন কিছু না যে মার্কেটে ট্রডিং করা। এরা কোন বন্ধু বা আত্বিয় বা অন্যের কথা শুনে ট্রেড করে। 

২. ট্রেডিং কে গ্যাম্বলিং মনে করা :

এ ধরণের লোক নিউজ আর গ্যাম্বলিং আইটেম এর উপর ভিক্তি করে ট্রেড করে। এরা কোন টেকনিক্যাল ফান্ডামেন্টাল বা সাইকোলজিকাল এনালাইসিস দেখেনা। 

৩. ইমোশনাল ট্রেডিং : 

ভাবনার ট্রেডিং এটি আমাদের সবার মধ্যে আছে। ইমোশনাল দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ট্রেডার এমন কাজ করে যা তার করা উচিত না।  ইমোশনাল ট্রেডিং   টেকনিক্যাল ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস জানা না জানা সকলকে প্রভাবিত করে।  টেকনিক্যাল এনালাইসিস জানা লোক এনালাইসিস দেখে একটি ট্রেডে এন্ট্রি নিয়েছে। তারপর তার ইমোশান তাকে নানা ভাবে প্রভাবিত করতে থাকে। মন বলতে থাকে এ ট্রেড ভুল হয়ে গেছে নাকি, প্রাইস এখন থেকে উল্টে না যায়, যদি স্টপ লস হিট করে তা হলে কি হবে  এ রকম অনেক চিতা মনের মধ্যে ঘুরপাক খায়। এর ফলে ব্রেনে এবং মনে ট্রেড কে নিয়ে ভয়ের সৃষ্টি হয়।  এবং ভয়ের শুরু হয়।  সে জন্য টার্গেটে পৌঁছার আগেই ট্রেড থেকে এক্সিট হয়ে যাই।  তারপর ট্রেড টার্গেট হিট করে আর নিরাশ হতে থাকি।  আর ভাবতে থাকি আমি তাড়াহুড়া কেন করলাম।  ভয় এবং লোভে পড়ে ট্রেড থেকে বের হয়ে যাওয়া যাবে না।  যে ট্রেডার নিজের ইমোশানকে কন্ট্রোল করতে পারে না সে সব সময় লস খায়। আমরা আমাদের ইমোশানকে কন্ট্রোল করা শিখতে হবে। কোন ভয় , লোভ , খুশি তে ট্রেড নেয়া যাবে না।  বাজার ট্রেডারের ইচ্ছা অনুযায়ী চলবে না ট্রেডার কে বাজার এর ইচ্ছা অনুযায়ী চলতে হবে। 

৪. ট্রেডিং ফোমো:

 ট্রেডিং ফোমো  এর মানে হল ট্রেড মিস করার ভয়। ট্রেড ধরতে না পারার ভয়। আমি মনে হয় আর কিনতে পারলাম না দাম মনে হয়  বেড়ে যাচ্ছে এখুনি কিনে ফেলি।  আমরা সবাই কোন না কোন ভাবে মার্কেটের ট্রেডিং ফোমোর শিকার হয়ে যাই।  ট্রেডিং ফোমোর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আমরা আমরা ট্রেড করে ট্রাপে পড়ে যাই। 

৫. ওভার এনালাইসিস :

মার্কেটকে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি এনালাইসিস করা।  অনেক ট্রেডার আছেন যারা ট্রেড নেবার আগে এবং পরে বিভিন্ন স্ট্রেটেজি বা  ইন্ডিকেটর দ্বারা ট্রেডকে এনালাইসিস করতে থাকে।  তখন দেখা যায় এক স্ট্রেটেজি বাই দেখায় তো অন্য স্ট্রেটেজি সেল দেখায়।  আবার দেখা যায় কিছু  ইন্ডিকেটর বাই দেখায় তো অন্য ইন্ডিকেটর সেল দেখায়। এ জন্য ওভার এনালাইসিস করলে ট্রেডে কনফিউশান বেড়ে যায়। এ জন্য এক ট্রেডে একই স্ট্রেটেজি অনুসরণ করা জরুরি। একাধিক ইন্ডিকেটর একসাথে অনুসরণ করা ঠিক না।  

৬. ওভার ট্রেডিং  :

প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ট্রেড  করা। একদিন একসাথে অনেক ট্রেড করা। একটি ট্রেড শেষ করে অন্য একটি একটি ট্রেড করা।  

৭. বিনা স্টপ লসে ট্রেডিং করা :

মার্কেটে অধিকাংশ ট্রেডের বিনা স্টপ লসে ট্রেডিং করে থাকে। 

৮. এভারেজিং :

 স্টপ লস না দিয়ে এভারেজ করাতে লেগে যাওয়া। 

৯. একসাথে অনেক বেশি পরিমান শেয়ার ট্রেড করা 

বেশি প্রফিট করার আশায় একসাথে অনেক বেশি পরিমান শেয়ার ক্রয় করা।  

যদি আপনার মধ্যে এ ধরণের অসফল ট্রেডারের আচরণ থেকে থাকে  তা হলে সংশোধন করে ফেলুন।  

 ট্রেডিং  সাইকোলজি অনুযায়ী একজন সাকসেসফুল ট্রেডারের বৈশিষ্ট্য 90% ওয়েটিং আর ১০% ট্রেডিং।

সাকসেসফুল ট্রেডার এর সাইকোলজি এবং বিহেভিয়ার

একজন সফল ট্রেডারের মাইন্ড সেট এবং থিংকিং প্রসেস কিরকম হবে।  

আমরা অনেকে ভালো টেকনিক্যাল এনালাইসিস জানি কিন্তু ট্রেডিং সাইকোলজি টা ভালোভাবে বুঝতে পারিনা যার জন্য আমাদের টেকনিক্যাল এনালাইসিস জানা সত্ত্বেও আমরা মার্কেট থেকে ভালো প্রফিট নিতে  পারি না

 ট্রেডিং সফল করার জন্য করার জন্য ৯০% ট্রেডিং সাইকোলজির দরকার হয় আর ১০% টেকনিক্যাল এনালাইসিসের প্রয়োজন হয়

 একজন সফল ট্রেডারের গুণাবলী 1. ধৈর্য 2.কনফিডেন্স 3. ডিসিপ্লিন 4. ইমোশনলেস  5. সেলস কন্ট্রোল ৬. বিনা ভয় ট্রেড করা বা ট্রেডিং ফোবিয়া হতে দূরে থাকা 

একজন সফল ট্রেডারের সাইকোলজি এবং আচরণ কেমন হয়ে থাকে :

একজন সফল ট্রেডারের মাইন্ড সেট কেমন হয় এবং থিংকিং প্রসেস কেমন হয়। একজন সফল ট্রেডারের জানেন যে ট্রেডিং জিততে হলে হল ৯০% অপেক্ষা করা ১০% ট্রেড নেয়া। ট্রেডিং খেলা জিতার  জন্য ৯০% অপেক্ষা করার মানে হল ১. টেকনিক্যাল ব্রেকআউট হবার জন্য অপেক্ষা ২. ইন্ডিকেটর ব্রেকআউট হবার জন্য অপেক্ষা ৩. যে কোন চার্ট প্যাটার্ন সম্পূর্ণ হবার জন্য অপেক্ষা করা ৪. কেন্ডেলস্টিক প্যাটার্ন সম্পূর্ণ হবার জন্য অপেক্ষা করা ৫. সর্বশেষ বাই অথবা সেল করার সংকেত দেবার জন্য অপেক্ষা করা। 

একজন সফল ট্রেডারেরগুণাবলী ১. ধর্য্য  2.কনফিডেন্স 3. ডিসিপ্লিন 4. ইমোশনলেস  5. সেলস কন্ট্রোল ৬. বিনা ভয় ট্রেড করা বা ট্রেডিং ফোবিয়া হতে দূরে থাকা

১. ধর্য্য  

একজন সফল ট্রেডারের সফল হবার প্রথম গুন হল ধর্য্য। যদি আপনি একজন সফল ট্রেডার হতে চান তাহলে আপনার মধ্যে ধর্য্য থাকা খুব জরুরি। কারন আপনার ভিতরের ধর্য্য নির্ধারণ করে দিবে আপনি সফল হবেনা নাকি অসফল হবেন।  ধর্য্য না থাকলে শেয়ার বাজার থেকে দূরে থাকা উচিত। ট্রেডিং দ্বারা আপনার মাইন্ডসেট প্রফিট বা লস হবার পর আপনি নিজের উপর কতটুকু কন্ট্রোল রাখতে পারেন।  রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কিভাবে করেন। নিজেকে ভয় এবং লোভ থেকে কিভাবে বিরত রাখেন। ট্রেডিং এর সময় ইমোশান দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আপনার দুঃচিন্তা গুলি কিভাবে প্রতিহত করবেন।  এসব স্কিলস কে শিখার জন্য ট্রেডার কে প্রয়োজন ধর্য্য ধরা । 

আপনি একটি চার্ট দেখছেন যেখানে ব্রেকআউট হবার সম্বাবনা তৈরী হচ্ছে।  মনে করেন কোন শেয়ার ২০৫ টাকা গেলে ব্রেকআউট হবে। এখন শেয়ার টি ২০৩ টাকায় ট্রেড হচ্ছে। এসময় এটা চিন্তা করলে হবে না যে এ শেয়ার ২ টাকা কমে পাচ্ছি।  এটাই এখনই কিনে ফেলি। এ জায়গায় আপনাকে  ধর্য্য ধরতে হবে। ব্রেকআউট কে হতে দিতে হবে। কেন্ডেলের ক্লোজিং এর জন্য অপেক্ষা করতে হবে। যখন ঐ শেয়ার ২০৫ টাকার উপর গিয়ে ২০৬- ২০৭ তাকে টাকায় ক্লোজিং হবে তখন ২০৭-বা ২০৮ টাকায় ট্রেড নিতে হবে। যখন আপনি যখন আপনি এভাবে ট্রেডিং করবেন তখন আপনি  এটি বিচক্ষণ এবং ধোর্যশীলের প্রতীক হবেন ।  একজন অসফল ব্যক্তির ধর্য্যের এত কম হয় যে কোন চার্ট সম্পূর্ণ হবার আগেই ব্রেনে ওই প্যাটার্ন বানিয়ে ফেলে। এখানে আমাদের বুঝতে হবে একজন অসফল ব্যক্তি কিভাবে চার্টে ব্রেকআউট হবার আগেই ট্রেডার এর মনে ব্রেকআউট হয়ে যায়।  আর এর কারণে তাড়াতাড়ি ট্রেড নিয়ে ফেলে। যেন মনে হচ্ছে কোন ট্রেন ছুটে যাবে। আর এ তাড়াহুড়ার কারনে ট্রেডার এর লস হয় এবং ট্রেডিংয়ে সফল হয় না।  

যখন কোন ট্রেডে এন্ট্রি নিয়ে হয় তখন ধর্য্য ধরে টার্গেট এবং স্টপলস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কারন আপনি যখন ট্রেড নিয়েছেন তখন কোন না কোন টেকনিক্যাল কারন দেখেই ট্রেড নিয়েছেন। আপনি কখনো ভয় এবং লোভে পড়ে ট্রেড থেকে বের হয়ে যাবেন না।  যদি স্টপলস হিট হয় হতে দেন। আপনি এ জায়গায় ভয় পাবেন না। বা এটিকে বদলানোর চেষ্টা করবেন না । যদি টার্গেট হিট হয় তবে লোভে পড়ে এটিকে বদলানোর চেষ্টা করবেন না। আপনি যেহেতু কোন টেকনিক্যাল অনুসারে ট্রেড নিয়েছেন তাই সে টেকনিক্যাল অনুসারে এক্সিট হয়ে যান। 

২. আত্মবিশ্বাস : 

একজন বিনিয়োগকারীর ভিতর নিজের ট্রেডিং সিস্টেম নিয়ে আপনার ট্রেডিং প্ল্যানের উপর ট্রেডিং স্ট্রেটাজির বা ট্রেডিং রিসার্চের উপর উপর পুরা ভরসা থাকতে হবে। যদি না থেকে থাকে তাহলে প্রথমে এক ট্রেডিং প্ল্যান বানান ট্রেডিং স্ট্রেটাজি বানান। যার উপর আপনার ১০০% বিশ্বাস আছে।  যেটার  একুরেছি  কম পক্ষে ৭০% হয়। ট্রেডিং প্ল্যান অনুযায়ী এন্ট্রি , এক্সিট , স্টপ লস দিতে হবে। দুনিয়ার অন্যে যাই বলুক আপনার ট্রেডিং প্লেনে যেন এটার কোন প্রভাব না পরে।  আপনার ট্রেডিং প্ল্যানের উপর পুরা আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। কোন নিউজ পেপার নেগেটিভ নিউজ দিচ্ছে, কোন এক্সপার্ট ভাই বলতেছে এ স্টকে তো এটা হবে, কোন এডভাইজিং কোম্পানি স্টকে সেলিং সিগন্যাল দিচ্ছে আপনাকে এ কথার কোন গুরুত্ব দিতে হবে না । আপনাকে শুধু  আপনার আর আপনার ট্রেডিং প্লানের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে। কারণ আপনি যে ট্রেডিং প্ল্যানে চার্টকে এনালাইসিস করেছেন তার একুরেছি  তো  ৭০% এর উপর। চার্ট সব জানে।  চার্ট আপনাকে কখনো ভুল বলবে না। আমাদের বাজারের কোন বড় ভাই বা ছোট ভাইয়ের টিপস এ কাজ করা বন্ধ করতে হবে। আপনি শুদু আপনার ট্রেডিং প্ল্যান অনুযায়ী নিজের জন্য টিপস বানাতে হবে আর সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে।  কোন ট্রাডিং প্ল্যান এর উপর তখনি  আত্মবিশ্বাস আসবে যখন এটি আপনি নিজে বানাবেন।  ট্রেডিংয়ে এন্ট্রি নেবার সময় আপনাকে জানতে হবে ১. আপনাকে কোথায় এন্ট্রি নিতে হবে ২. কখন এন্ট্রি নিতে হবে  ৩. কেন এন্ট্রি নিতে হবে ৪. ট্রেডে আপনার স্টপলস কোথায় হবে ৫. স্টপলস নেবার পিছনে আপনার লজিক কি ৬. আপনার টার্গেট এবং স্টপলসের রিস্ক এন্ড রিওয়ার্ড রেশিও ২% রুলের মধ্যে আছে নাকি নাই।  ট্রেডিং প্ল্যান বানানোর পর আপনাকে সেটার ব্যাকটেস্ট করা লাগবে।  এটাকে লাইভ মার্কেটে পেপার ট্রেডিং করে টেস্ট করতে হবে।  একজন সফল বিনিয়োগকারীর হতে হলে আপনাকে আপনার ট্রেডিং প্লানের উপর আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। 

৩. ডিসিপ্লিন : 

আপনি যদি একজন সফল ট্রেডার হতে চান তাহলে আপনাকে আপনার ট্রেডিংয়ে ডিসিপ্লিন আনতে হবে।  ট্রেডিংয়ে ডিসিপ্লিন এর মানে হলো আপনি ট্রেডিংয়ের যে রুলস তৈরি করেছেন এবং যে সিস্টেম তৈরি করেছেন সেটি খুব কঠোর ভাবে পালন করতে হবে। অনেকে ট্রেডিং নেয় কিন্তু দিনের কেন্ডেল  সম্পূর্ণ না হওয়ার আগেই ট্রেড ক্লোজ করে দেয় এটা ঠিক নয়।  যখন ট্রেড লস একদিকে আসেনি তখন ভাবি যে ক্রয় দামের নিচে চলে আসলে  সেল করে দিব আবার যখন প্রফিট  হয় তখন কালকের জন্য অপেক্ষা করি যে কালকে ভালো প্রফিট পেলে তারপর এক্সিট করব।  এখানেই আমরা সবাই ভুলটি করে থাকেন থাকি।  এখানে ভয়ের কারণে আমরা ক্রয় দামের  কাছে আসলেই শেয়ার বিক্রি করে দি এবং লোভের কারণে প্রফিট হওয়ার পরে পরেও এক্সিট হইনা অপেক্ষা করতে থাকি। এ ধরনের কাজের মাধ্যমেই আমরা আমাদের ট্রেডিং ডিসিপ্লিন কে নিজেরাই ভাঙ্গি। এ ধরনের মূল আমরা বারবার করতে থাকি।  আমরা আরেক ভুল করে থাকি স্টপ লস না দিয়ে এবং এই স্টপ লস না দেওয়া বারবার এই ধরনের ভুল টাই করি। আপনাকে আপনার ট্রেডিং সিস্টেম বা  ট্রেডিং রুলস অনুযায়ী স্টপ লস একজিট প্রত্যেক এবং এন্ট্রি সবগুলো দিতে হবে কোনভাবেই ডিসিপ্লিনের বাইরে যাওয়া যাবে না।  আপনি যদি সফল হতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই আপনার ট্রেডিং প্ল্যান ট্রেডিং সিস্টেম এবং ট্রেডিং রুলস খুব  কঠিন ভাবে অনুসরণ করতে হবে। সফল হতে হলে কোনভাবেই এর ব্যতিক্রম হওয়া যাবে না।  

৪. ইমোশানলেস ট্রেডিং : 

 ইমোশানলেস ট্রেডিং মানে হলো রাগ , ভয় , ক্ষোভ , জোশ , হুমকি, ভীতিপ্রদর্শন, ভয় , ভীরু, ভীত, শঙ্কিত, আতঙ্কিত, আশঙ্কিত, আতঙ্কগ্রস্ত, ডরালু , লোভ , লালসা , আবেগপ্রবণতা, আবেগ, আবেগ, অনুভূতি, মানসিক চাঁচল্য, মানসিক আবেগ, চেতন, চেতনা, আবেগ, রাগ, গভীর আসক্তি, কামেচ্ছা, প্রচণ্ড আবেগ, গভীর প্রণয়, চাপল্য, চটুলতা, অস্থিরতা, ছটফটানি, ধৈর্যহীনতা, বিশ্রামহীনতা, বিশৃঙ্খল অবস্থা কে নিয়ন্ত্রণ করা।    

ইমোশানলেস ট্রেডিং মানে হলো কোন কিছু অনুমান কে প্রশ্রয় না দিয়ে ইমোশান হীনভাবে ট্রেডিং করা যেমন রোবট চালিত ট্রেডিং করে।  এই বাজারে যারা সফল হয়েছেন তারা সবাই অনুমান কে দূরে রেখে আবেগকে প্রশ্রয় না দিয়ে ইমোশন কিভাবে ট্রেড করে গেছেন তাদের প্ল্যান অনুযায়ী।  তারা কখনোই তাদের ইমোশনকে ট্রেডিং নিয়ে আসে নাই।  স্টক মার্কেটের সফল ব্যক্তিদের মাইন্ডসেট সব সময় একটি মেশিনের মত কাজ করে।  ট্রেডিং এর ক্ষেত্রে তাদেরকে যে যাই বলুক এতে  তাদের মধ্যে কোনও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি না। তারা তাদের প্ল্যান অনুযায়ী চলতে থাকে কোন ভয় ও  লোভ ওদের মধ্যে কাজ করে না। এরা কখনো কোন ব্যক্তি  দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ট্রেড করে না।  এরা কোন নিউজ বা নিউজ চেনেলের দ্বারা প্রভাবিত বা বিচলিত হয়ে ট্রেড করে। এরা কখনো কোন প্রকার ব্রোকার বা মামু  দ্বারা প্রভাবিত হয় ট্রেড করে না।  ওরা তাদের ট্রেডিং রুলস  অনুসারে মেশিনের মত ট্রেড করতে থাকে।  একজন সফল ট্রেডার ইমোশনকে সবসময় কন্ট্রোলে রাখে। একজন সফল ট্রেডার সবসময় ইমোশন ট্রেডিং থেকে দূরে থাকে।  ইমোশনকে কন্ট্রোল না করতে পারে তাহলে একজন ট্রেডার ভুল ট্রেড নিয়ে থাকে।  ইমোশন দ্বারা প্রভাবিত হয় নিজের ট্রেডিং রুলস কে ভেঙে ফেলে।  তাহলে এ বাজার তাকে ভেঙে ফেলবে এ কথাটা সব সময় মাথায় রাখতে হবে।  ট্রেডিং সাইকোলজি আমাদেরকে এটাই শিখায় যে কখনোই ইমোশন দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কোন প্রকার ট্রেড নেওয়া যাবে না।  যদি আপনি একজন সফল ট্রেডার হতে চান তাহলে একজন সাকসেসফুল ট্রেডারের মত চিন্তা করতে হবে একজন সাকসেসফুল রিডারের মতো মাইন্ডসেট তৈরি করতে হবে ট্রেনিং এর সময় আপনাকে ইমু সামলেছে ট্রেডিং করতে হবে মেশিনের মত ট্রেডিং করতে হবে কারণ একজন সফল ট্রেডার এর সবচেয়ে বড় কোয়ালিটি বা গুন।  

৫. আত্মনিয়ন্ত্রণ বা সেলফ-কন্ট্রোল: 

আত্মনিয়ন্ত্রণ বা সেলফ-কন্ট্রোল এর মানে হলো নিজের উপর নিজের নিয়ন্ত্রন।  আপনি কি কখনো ভেবে দেখেছেন আপনার নিজের উপর এবং আপনার ট্রেড এর উপর আপনার নিজের নিয়ন্ত্রন কতটুকু আছে।  ট্রেডিং  এর সময় আপনাকে বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে আলাদা আলাদা বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে হয়।  ট্রেডিং  এর সময় আমরা বিভিন্ন ধরনের আবেগ দ্বারা প্রভাবিত বা নিয়ন্ত্রিত হয় সেই সময়ে আমাদের নিজেদের উপরে নিজের কন্ট্রোল কতটুকু আছে সেটা নিজেকে বুঝতে হবে। একটি শেয়ারে এন্ট্রি নেবার পর শেয়ারের উপরে উঠা নামার উপর ভিত্তি করে আমাদের আবেগ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম হয় বাজারের পরিস্থিতি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে যখন আমরা ট্রেনটি নিয়েছি তখন পরিস্থিতি একরকম ছিল ট্রেডে এন্ট্রি নেওয়ার পরেই বিভিন্ন রকম পরিস্থিতি তৈরি হয় শেয়ারের দামের উঠানামার মাধ্যমে এমনও হতে পারে এমনও হতে পারে এন্ট্রি নেওয়ার পরপরই শেয়ারের দাম কমতে থাকে আবার অ্যান্টি নেওয়ার সাথে সাথে শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে এই সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখা টাই সবচেয়ে জরুরি গুরুত্বপূর্ণ।  একটি শেয়ারে এন্ট্রি নেবার পর শেয়ারের উপরে উঠা নামার উপর ভিত্তি করে আমাদের আবেগ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম হয় বাজারের পরিস্থিতি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে যখন আমরা এন্ট্রি   নিয়েছি তখন পরিস্থিতি একরকম ছিল ট্রেডে এন্ট্রি নেওয়ার পরেই বিভিন্ন রকম পরিস্থিতি তৈরি হয় শেয়ারের দামের উঠানামার মাধ্যমে এমনও হতে পারে এমনও হতে পারে এন্ট্রি নেওয়ার পরপরই শেয়ারের দাম কমতে থাকে আবার এন্ট্রি  নেওয়ার সাথে সাথে শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে এই সময় নিজে।  একটি শেয়ারে এন্ট্রি নেবার সাথে সাথে শেয়ারের দাম কমতে থাকে এই জিনিসটা কমবেশি আমাদের সবার সাথেই হয়ে থাকে কারো সাথে বেশি আবার কারো সাথে কম এটা শুধু একজনের সাথেই হয়না এটা প্রায় সবার ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে আমরা সবাই ভীতসন্ত্রস্ত ভয় পেয়ে যাই আমাদের self-control অনেক কাজে আসে ভয় না পেয়ে ধৈর্যসহকারে পরিস্থিতি মোকাবেলা করা উচিত কারণ আপনি ভেবেচিন্তে এনালাইসিস করেই এন্ট্রি দিয়েছেন তাই আপনার নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে এবং নিজের এনালাইসিস এর উপর বিশ্বাস থাকতে হবে।  বাজার সবসময় আপনার মন মত হবে না।  বাজারের উঠানামার সাথে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারাটাই একজন সফল ট্রেডার এর বড় বৈশিষ্ট্য বা গুন।  নিজে এনালাইসিস করে ট্রেড নিয়েছেন।  এন্ট্রি নেওয়ার সাথে সাথে আপনার সে এনালাইসিস ভুল প্রমাণ করে মার্কেট উল্টোদিকে চলতে পারে। আপনার লজিক গুলো ভুল প্রমাণিত হতে পারে।  আপনি এনালাইসিস করতে ভুল করেছেন।  সঠিক স্টক নির্বাচন করতে ভুল করেছেন।  আপনি যে ক্যালকুলেশন করে শেয়ার টিতে এন্ট্রি নিয়েছেন সেটি ভুল প্রমাণিত হতে যাচ্ছে।  আপনার ট্রেড লসে  চলে গেছে।  আপনার লস ক্রমান্নয়ে বৃদ্ধি পেতে থাকলো।  এ সময় আপনি নিজেকে কন্ট্রোল রাখতে হবে।  নিজের উপর নিজের নিয়ন্ত্রন থাকতে হবে।  তাৎক্ষণিক বুদ্ধিমত্তার সাথে ট্রেডকে স্টপ লস দিয়ে এক্সিট হয়ে যাওয়া টাই আপনার জন্য বুদ্ধিমানের কাজ। নিজের উপর খুশি হওয়া দরকার যে আপনি আপনার লসের পরিমাণকে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছেন।  অন্য একটি ট্রেড দ্বারা সেটি পুষিয়ে নিতে পারবেন।  একজন সফল ট্রেডার জানে কিভাবে তার লস কাভার করতে হবে এবং কিভাবে তার এবং কিভাবে রিকভার করা যাবে কত নিলে তার কত ফিট করা লাগবে এ ক্যাল্কুলেশন গুলো একজন সফল ট্রেডার খুব ভালোভাবেই করে থাকেন।  নিজের  বুদ্ধিমত্তার সাথে এবং সৎ ভাবে শেয়ার এনালাইসিস।  করতে হবে কোনরকম প্রভাবিত হয়ে  বা শেয়ারের প্রতি আসক্ত বা দুর্বল হয়ে কোন এনালাইসিস করা যাবে না।  চারটে যেটা ফুটে উঠবে সেটাই এনালাইসিস করতে  হবে।  কারণ আপনার এনালাইসিস এর উপর নির্ভর করে আপনার ট্রেডিং প্ল্যান তৈরি হবে।  আর সেই ট্রেডিং প্ল্যান অনুযায়ী স্টকে এন্ট্রি - স্টপ লস -প্রফিট টেকিং  নির্ভর করবে।  তাই আপনাকে শেয়ারের প্রেমে না পরে সঠিক এনালাইসিস টি করতে হবে।  এন্ট্রি নেবার পরে বাজারের উপর আমাদের কোনো কন্ট্রোল থাকবে না তাই আমাদের কন্ট্রোল থাকতে হবে আমাদের এনালাইসিস এর উপর।  এন্ট্রি নেবার পর বাজার গ্যাপ  ডাউন ওপেন হতে পারে।  কম ভলিয়্যুমে ট্রেড হতে পারে।  প্রাইস নিচের দিকে নামা শুরু করতে পারে।   ট্রেন্ড সাইডওয়েজে চলে যেতে পারে।  তখন দ্রুত ট্রেড ক্লোজ করে ফেলতে হবে।  কারন একটা কথা আছে কাঠ ইউর লসেস  ফাস্ট লেট ইউর প্রফিটস রানস।  এর মানে হল যখন কোন ট্রেড লসে যাওয়া শুরু করে তখন দ্রুত সে ট্রেড ক্লোজ করে দিতে হবে বা এক্সিট হয়ে যেতে হবে।  আর যে ট্রেড প্রফিট হচ্ছে সেট্রেড ধরে রাখতে হবে। একজন সফল ট্রেডার এর বৈশিষ্ট্য হলো নিজেকে নিজের উপরে নিয়ন্ত্রণ করতে শিখা বা পারা।  

৬. বিনা ভয়ে ট্রেড করা বা ভয়হীন ট্রেড করা : 

 বিনা ভয়ে ট্রেড করা বা ভয়হীন ট্রেড করা এর মানে হলো ট্রেডিং কে বিনা ভয় করা। যদি আপনাকে এখন বাজারে সফল  এবং সাকসেসফুল ট্রেডার হতে চান তাহলে আপনাকে নির্ভয় ট্রেড করতে হবে।  আপনি যদি একজন ভাল প্রফেশনাল ট্রেডার হতে চান তাহলে আপনার ভিতর ভয়হীন ট্রেড করা এই গুণটি অবশ্যই থাকতে হবে।  নির্ভয় ট্রেড করা একজন সফল ট্রেডার এর বৈশিষ্ট্য।  যদি আপনাকে এখন বাজারে স্বপন এবং সাকসেসফুল ট্রেডার হতে হয় তাহলে আপনাকে নির্ভয় ট্রেড করতে হবে।  যখন একজন ট্রেডার ভয়হীন ভাবে ট্রেড করতে থাকে তখন তার সাকসেস রেট অনেক গুণে বেড়ে যায়।  একজন ট্রেডারের ট্রেডারের বাজারে কেন ভয় লাগে প্রথমে জানতে হবে কারণ হলো আপনার অতীত ভালো না বা সফল নয় আপনি প্রথমে বিনা বিনা শিক্ষায় বিনা এনালাইসিস লোকের কথা শুনে বা কোন এক বাজারের কথা শুনে এন্ট্রি নিয়েছেন।  আর ওইসব ট্রেড আপনার লস হয়েছে।  অতীতে এত লস  নিয়েছেন যে আপনার ট্রেড নিতে ভয় হয়।  আপনার বাই কোয়ান্টিটি অনেক বেশি যার জন্য স্টপ লস হিট হলে আপনার অনেক লস হয়ে যায়। এজন্য আপনি ট্রেড নিতে ভয় পান।  যদি আপনার ট্রেড নিতে ভয় হয় তবে আপনার ঐ ভোরের কারণগুলো আগে দূর করতে হবে তারপর আপনাকে কেউ নিতে হবে।  যেমন বিনা নোলেজে ট্রেডে এন্ট্রি নেওয়া,  বিনা এনালাইসিস ট্রেডে এন্ট্রি নেওয়া, বিনা স্টপ লসে  ট্রেড করা, লোকের কথায় ট্রেড করা, নিউজ চ্যানেলের কথা শুনে ট্রেড করা, কারো  অ্যাডভাইজিং ট্রেড করা ও বেশি কোয়ান্টিটি  নিয়ে ট্রেডে এন্ট্রি নেওয়া করা।   আগে যে ভুল গুলি করেছেন আপনাকে আপনার সে  ভুলগুলো লিখতে হবে এবং প্রতিজ্ঞা  করতে হবে যে এই ভুলগুলো আর করবেন না।   যদি আপনাকে বাজারে ভয়হীন ভাবে কাজ করতে হয় তাহলে আপনাকে প্রথমে বাজারকে ভাব বুঝতে হবে বাজারে গতিপ্রকৃতি বুঝতে হবে,  টেকনিক্যাল এনালাইসিস শিখতে হবে , ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস শিখতে হবে, ট্রেডিং সাইকোলজি কে বুঝতে হবে।  

বিনা ভয়ে ট্রেড করা বা ভয়হীন এর সাথে ট্রেড করার কিছু টিপস নিম্নে দেওয়া হল

১. আপনি সেই পরিমাণ টাকার ট্রেড করেন যে পরিমাণ টাকা লস হলেও আপনার তেমন কষ্ট লাগবেনা বা ক্ষতি হবে না।  যার কারণে আপনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হবেন না।  

২. যে পরিমাণ কোয়ান্টিটি নিয়ে ট্রেড করলে আপনি ভয়হীন ভাবে ট্রেড করতে পারবেন।  আপনাকে সেই পরিমাণ কোয়ান্টিটি  নিয়ে আপনাকে ট্রেড করতে হবে যাতে আপনি ভয়হীন ভাবে ট্রেড করতে পারেন।  যে পরিমাণ কোয়ান্টিটির  শেয়ার নিলে স্টপ লস করলে আপনার ভয় লাগবে না।  আপনাকে সেই পরিমাণ কোয়ান্টিটি নিয়ে ট্রেড করতে হবে।  আপনি আপনার কোয়ান্টিটি কে ধীরে ধীরে বাড়াতে পারেন যেমন ১০০, ২০০, ৩০০, ৪০০, ৫০০ এভাবে।  

বেশি কোয়ান্টিটি নিয়ে  ট্রেড করে লস এর সম্মুখীন হলে তখন একজন ট্রেডারের মধ্যে এক ধরনের ট্রেডিং ভয় কাজ করে।  তখন একজন ট্রেডারের ট্রেডিং ফোবিয়া হয়ে যায়।  আপনি যদি ট্রেডিংয়ে  সফল হতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই ভয়হীন ট্রেডিংয়ের বৈশিষ্ট্য অর্জন করতে হবে।  

আপনার মধ্যে এ গুন বা  কোয়ালিটির কোন  গুলো আছে তা উল্লেখ করুন

৭. মেক ফ্রেশ স্ট্রাট এভরি ডে : 

প্রতিদিন নতুন করে শুরু করা। একজন সফল ট্রেডারের জন্য প্রতি দিন এক নতুন দিন শুরু হয়।  একজন সফল ট্রেডারের জন্য গতকাল কত প্রফিট হয়েছে বা লস বা স্টপ লস কি হয়েছে সেটা কোন বিষয় না।  প্রতিদিন তারা নতুন করে শুরু করে। আজকের দিন আমার জীবনের সেরা ট্রেড হবে একজন সফল ট্রেডার এ ভাবে চিন্তা করে।  

৮. রিস্ক ম্যানেজমেন্ট : 

মানে হল ঝুঁকিকে নিয়ন্ত্রণ করা।  একজন সফল ট্রেডার তার ঝুঁকিকে নিয়ন্ত্রণ রাখার চেষ্টা করে। একজন লোক অনেক প্রফিট করার পর ওভার কনফিডেন্স হয়ে ট্রেডিং সিস্টেম ফলো করা ছেড়ে দেয়। পরবর্তীতে লসের সম্মুখীন হয়। এর মানে হল রিস্ক ম্যানেজমেন্ট এ কোন খেয়াল রাখে না। শেয়ার মার্কেটে লস হবে এটি মার্কেটের অংশ। কিন্তু স্টপ লস নেয়া রিস্ক ম্যানেজমেন্ট এর একটি অংশ।  রিস্ক ম্যানেজমেন্টে ২% রুলস রিস্ক ম্যানেজমেন্ট খুবই জনপ্রিয় একটি সিস্টেম।  টোটাল ক্যাপিটাল এর ২% এর রিস্ক নেয়াই ২% রুলস রিস্ক ম্যানেজমেন্ট এর মূলনীতি।  আপনি ১ লাখ টাকার মধ্যে কেবল ২ হাজার টাকার রিস্ক নিতে পারবেন।  এ নিয়মে আপনার লস সব সময় কন্ট্রোলে থাকবে।  ২% রুলস কে অভ্যাসে পরিণত করতে হবে।  

৯. মানি ম্যানেজমেন্ট : 

রিস্ক ম্যানেজমেন্ট মানে হল ক্যাপিটাল কে নিয়ন্ত্রণ করা। মানি ম্যানেজমেন্ট এর সিম্পল রুলস হল একটি সিঙ্গেল ট্রেডে  সম্পূর্ণ ক্যাপিটাল এক সাথে বিনিয়োগ না করা।  একজন সফল ট্রেডার এর বড় গুন হল মানি ম্যানেজমেন্ট কঠিন ভাবে পালন করা।  একটি সিঙ্গেল ট্রেডে  সম্পূর্ণ ক্যাপিটাল এর ৩০% বিনিয়োগ করতে হয় বা করা উচিত। তিনটি ট্রেডে ৩০% + ৩০%+৩০% ব্যবহার করলে ১০% ক্যাপিটাল হাতে থাকে।  


১০. রিস্ক টু রিওয়ার্ড : 

রিস্ক টু রিওয়ার্ড ১:৩ কে ফলো করতে হবে। রিস্ক টু রিওয়ার্ড ১:৩ মানে হল ১ টাকা স্টপ লস আর ৩ টাকা প্রফিট টার্গেট। 


একজন সফল ট্রেডারের স্ট্রেটেজি : একটি সিঙ্গেল ট্রেডে যদি আপনি  ২% রুলস রিস্ক ম্যানেজমেন্ট + ৩০% ক্যাপিটাল ব্যবহার + রিস্ক টু রিওয়ার্ড ১:৩

 এ স্ট্রেটেজি ফলো করে যদি আপনি তিনটি ট্রেড নেন আর ২টি যদি স্টপ লস হিট করে আর একটি যদি প্রফিট টার্গেট হিট করে। তা হলে আপনি সফল বিনিয়োগকারী।  আপনি যদি এ গুলির সমন্বয়ে ট্রেড করে নিজেকে ডেভেলপ করতে পারেন। তা হলে আপনার মাইন্ডসেট এবং থিংকিং প্রসেস এক আলাদা লেভেলের হয়ে যাবে বলে আমি মনে করি।  

১০. লোভী বা লালশি না হওয়া :

একজন সফল ট্রেডারের লোভ লালসা থাকবে কিন্তু সেটা নিয়ন্ত্রণ সীমার মধ্যে থাকতে হবে।  অনেক লোভের বশবর্তি হয়ে টার্গেট হিট করার পর ও প্রফিট টেক করা হয় না।  আরো লাভ হবে এ আশায়।  কখনো কখনো অতি লোভের কারনে লাভের শেয়ার ও  লসের সম্মুখীন হতে হয়।  একজন সফল ট্রেডার আপনার লোভকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। যখনি টার্গেট হিট করে তখন প্রফিট বুকিং করে নেয় ।

১১. নিরাশ না হওয়া : 

যখন কারো স্টপ লস হিট হয় তখন তার মধ্যে নিরাশা চলে আসে। নিরাশা নিয়ে কোন ট্রেড নিয়ে সে ট্রেড ব্যর্থ হবার সম্বাবনা বেশি থাকে।  নিরাশ হলে চিন্তা ভাবনা করার ক্ষমতা কমে যায়। যখন আপনি নিরাশায় থাকেন তখন কোন সিদ্বান্ত নেয়া উচিত না।  তাই আপনার নিরাশাকে কন্ট্রোল রাখতে হবে। নিজেকে ইমোশনালি দুর্বল মনে করলে কিছু দিন ট্রেড থেকে দূরে থাকা উচিত।

 ১২. বাস্তববাদী হওয়া : 

  শেয়ার মার্কেটে ৯০% লোক লস করে আর ১০% লোক প্রফিট করতে পারে। ট্রেডিং করার যে রুলস , টেকনিক , সিষ্টেম এ গুলি এখন সিক্রেট কোন জিনিস না। ইন্টারনেট ঘাটলে সব পাওয়া যায়। তার পরও টেকনিক্যাল ও ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস জানা লোক ৯০% ব্যর্থ কেন ? কি কারন যেটা একজন সফল ট্রেডার করে আর একজন অসফল ট্রেডার করে না তা হল ট্রেডিং সাইকোলজি মেনে চলা।  এক ট্রেড জীবন বদলে দিবে না। কিন্তু ছোট ছোট প্রফিট টেক করার অভ্যাস গড়ে তুল্লে আস্তে আস্তে জীবন বদলে যাবে। তাই আমাদের এটমিক প্রফিট টেকিং হ্যাবিট গড়ে তুলতে হবে। তাই আপনাকে বাস্তবিক চিন্তা ভাবনা করতে হবে। এক ট্রেডে টাকা দ্বিগুন -পাঁচ গুন করে ফেলবেন এ অবাস্তব চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।  একজন অবাস্তবিক ট্রেডার লোভে পড়ে সকল ট্রেডিং নিয়ম ভেঙে ফেলে এবং অসফল হয়।  একজন অবাস্তবিক ট্রেডার ভয়ে তার ট্রেড অসফল করে ফেলে।  অবাস্তবিক আশা ও চিন্তার কারনে ৯০%  ট্রেডার অসফল হয়ে পড়ে।  এক ট্রেড এ বড় প্রফিট নেবার আশায় অনেক বড় রিস্ক নিয়ে নেয়।  এক জন ট্রেডারের অবাস্তবিক আশা ও ট্রেডের কারণ ইমোশনাল ট্রেডিং।  যদি আপনি এ ধরণের মায়াজাল থেকে বাঁচতে চান তা হলে কেপিটেলের কিছু অংশ করে প্রফিট করার অভ্যাস করুন এবং বাস্তববাদী চিন্তা করুন।  উদাহরণ স্বরূপ মাসে ১০%- ১৫% প্রফিট করার চিন্তা করুন।  একটা একুরেট ট্রেডিং সিষ্টেম ৭০% এর উপরে ট্রেডিং সাকসেস রেট এবং ১৫% মাসে প্রফিট এ ভাবে বাস্তববাদী চিন্তা করা উচিত।  যেটি একটি বাস্তববাদী লক্ষ এবং এটা অর্জন করা এমন কঠিন কিছু না।  আর এ ধরণের লক্ষে কোন সময় ১৫% এর বেশি ও প্রফিট চলে আসে। তাই আজ থেকেই মাসিক টার্গেট ঠিক করে ফেলুন আর সে হিসাবে কাজ করতে থাকুন।  আপনি সফল হতে থাকলে প্রফিট টার্গেট বাড়াতে থাকুন।  তাই আপনি এ ধরণের লোকের খপ্পরে পড়বেন  না যে বলবে ১ মাসে টাকা ডবল।  বাস্তবিক রিটার্ন পাবার আশা করুন।  আর এ গুনটি আপনাকে একজন সফল ট্রেডার এ পরিণত  করবে।  

১৩. নিজের ভুল স্বীকার করা :

আপনার স্টপ লস , আপনার টেকনিক্যাল এনালিসিস ভুল বা কারো কথায় শেয়ার কিনে লসে পড়া এসব মেনে নিতে হবে নিজের ভুল বলে। এটা আপনার ভুলের কারণে হয়েছে এটা মানতে হবে। এটা মার্কেট বা টেকনিক্যাল কোন ভুল নয়।  মার্কেট যেখানে যাবার ঘুরাঘুরি করে সেখানে যাবেই। মার্কেটের কোনো ভুল নাই ভুল সব নিজের এবং টেকনিক্যাল এনালাইসিস কে রিড করার ভুল সিষ্টেম এ কথা মানতে হবে। আপনার ভুল সিদ্বান্ত আপনার লসের কারন এ কথা স্বীকার করতে হবে। ঐ ভুলগুলি শিক্ষা গ্রহণ করেন।  তা হলে আপনার ভুলগুলি সংশোধন হয়ে যাবে।  আর এ ভুলগুলি যেন বার বার  না হয় সে চেষ্টা করেন। একজন সফল বিনিয়োগকারী লসের জন্য টেকনিক্যাল এনালিসিস, মার্কেট  বা অন্য কারো দোষ দেয়  না। মার্কেট সব সময় সুযোগ দেয় সে সুযোগ যদি কাজে লাগাতে না পারি সে সুযোগ আমার নিজের। 

১৪. লসকে হজম করার ক্ষমতা: 

একজন সফল বিনিয়োগকারীকে লসকে হজম করার ক্ষমতা থাকতে হবে। জন সফল বিনিয়োগকারী হওয়ার জন্য আপনাকে লচকে সহ্য করার ক্ষমতা থাকতে হবে এবং লস হবার পরে নিজেকে নিয়ন্ত্রন করার ক্ষমতা তৈরি করতে হবে।  যদি আপনার লস হয়ে যায় তাহলে নিরাশ হবার কোন কারন নেই আবার যদি লাভ হয় তাহলে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হওয়ার কোন প্রয়োজন নেই।  প্রতিটি লস করার সাথে সাথেই একজন বিনিয়োগকারী কিছু-না-কিছু শিক্ষা পায় কিন্তু এই শিক্ষাগুলো নিজের ট্রেডিংয়ের কাজে লাগাতে হবে গুলো যেন বারবার করা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং নিজেকে সেভাবে গড়ে তুলতে হবে যেন ভবিষ্যতে আর কখনো এইধরনের ভুল না হয়।  

১৫. ডেইলি এনালাইসিস রেজাল্ট : 

প্রতিদিনের ট্রেডিং ধারা কি শিখা হচ্ছে সেটা একটি নোট করা এবং প্রতিদিনের মার্কেট কি হচ্ছে সেটা এনালাইসিস করা।  প্রতিদিনের ট্রেডিংয়ের ভালো-মন্দ দিক এনালাইসিস করার প্রত্যেকদিন জরুরী এবং সেটা নোট করে রাখাটা জরুরি।  প্রতিটি ট্রেডের লাবেলস ট্রেড এর ধরন এগুলো হিসাব রাখার জন্য বায়না লাইসেন্স করার জন্য একটি ডেইলি নোট বা ডায়েরি করা যেতে পারে।  ওই ডায়েরিতে নিজের মতামত লিখে রাখতে হবে।  আজ আপনি কোন বইটি করেছেন আজ আপনি কেন লস করেছেন  আজ আপনি কি করেছেন যার জন্য প্রফিট হয়েছে?  আজ আপনি কোন ট্রেডটি নিয়েছেন এবং কেন ট্রেড নিয়েছেন যার জন্য আপনি প্রফিট পেয়েছেন? সারাদিন ধরে যা শিখেছেন এবং বুঝেছেন সেগুলো প্রত্যেকদিনের ডায়েরিতে লিখে রাখুন।  প্রতিদিনের কয়েক মিনিটের এই নোটে আপনি অনেক ভালো একজন এনালিস্ট হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে না যা কোন কোর্স  করে বা কোন ট্রেনিং পরেও আপনি করতে বা শিখতে পারবেন না


১৬. পিছনে ফিরে না তাকানো: 

পিছনে ফিরে না তাকানো আপনি অতীতে যে ভুলগুলো করেছেন সেই বইগুলোর জন্য অনুশোচনা না করে বা পিছনে ফিরে না তোকে না দেখে আপনি সামনের দিকে কিভাবে ভালো করবেন তা নিয়ে এনালাইসিস করেন বা চিন্তা করেন


১৭. সাময়িক ছুটি নেওয়া: 

বাজার থেকে সাময়িক ছুটি নেওয়া যখন আপনি একটি টুইট করে লাভ বের করে নিবেন তখন আপনি সামরিক দুই একদিনের জন্য বাজার থেকে নিজেকে বিরত রাখুন বা কোনরকম ট্রেন থেকে বিরত রাখুন দু-তিনদিন মাইন্ড ফ্রেশ করে তারপর আবার বাজারে ট্রেড করুন। লাগাতার ট্রেড করার জন্য বিভিন্ন রকম ইমোশান কাজ করে এবং অতিরিক্ত ট্রেডের ধরুন মাথা ব্যথা মাথা ধরা এ ধরনের উপসর্গ দেখা দেয় এজন্য বাজার থেকে সাময়িক দুই-তিনদিন দূরে রাখা আমাদের দরকার। অনবরত ট্রেডিং করতে থাকলে ট্রেডিং দুর্বল হয়ে যায়  ভুল ট্রেড হয় ভালো ট্রেড  করার আবিলিটি কমে যায়। সপ্তাহে একদিন ছুটি কাটান সে দিন  ট্রেড নিয়ে কোনো চিন্তাভাবনা করার দরকার নেই।  নিজের পরিবারকে সময় দিন।  ভালো সময় অতিবাহিত করেন তাহলে আপনার ভালো ট্রেড  করার সুযোগ তৈরি হবে।  

কোন জিনিসকে অভ্যাসে পরিণত করতে হলে টানা ২১ দিন ওই জিনিসটাকে কন্টিনিউ করে যেতে হয়।  তাই আপনার ট্রেডিং সাইকোলজি স্ট্রং করার জন্য আপনাকে প্রতিদিন একজন সফল ট্রেডার এর বৈশিষ্ট্য, করণীয় ও বর্জনীয় কাজগুলো গুলি নির্দিষ্ট একটি সময়ে করতে হবে।  এজন্য একজন সফল ট্রেডার এর গুনাবলী গুলি একটি কাগজে প্রিন্ট করে প্রত্যেকদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে একবার করে পড়তে হবে।  টানা ২১ দিন পড়ার পর  এটি আপনার একটি অভ্যাসে পরিণত হবে।  

ইমোশন সাইকেল :

ইমোশন সাইকেল মানে হল চিন্তা বা ভাবনার চক্র। এটিকে সেন্টিমেন্ট সাইকেল ও বলা যায়।  ইমোশন সাইকেল কে বুঝার দ্বারা আপনি একজন ট্রেডারের ট্রেড নেবার আগে , ট্রেড নেবার পরে এবং ট্রেড চলা কালীন, ট্রেড থেকে বের হবার পর কি ভাবে বা তার মাইন্ডসেট কেমন হয়।  তার সাইকোলজি কেমন হয়। 

যখন ট্রেড নেয়া হয় তারপর প্রাইস বাড়ে বা কমে তখন আপনার ইমোশান কিভাবে বদলায়।  আপনার মাইন্ডসেট কেমন হয়।  এ ইমোশন মার্কেট খুব ভালো ভাবে বুঝতে পারে।  মার্কেট ট্রেন্ড কে সবসময় এটা জানে আপনি কি চিতা করছেন। আপনার মাইন্ডসেট কেমন হয়। আপনি এখন কেমন অনুভব করেন। বা আপনার ইমোশন কোন লেভেলের। এগুলি জেনে মার্কেট কয়েক বছর ধরে চলে।  মানুষের বিহেভিয়র একেই রকম গত কয়েক শতক ধরে। মানুষের বিহেভিয়র একটুও বদলায়  নাই।  মানুষ প্রথম থেকে যে ভুল করে আসতেছে এখনো সে একই ভুলই  করছে।  ট্রেডিং সাইকোলজি ধারা আমরা এটা বুজতে পারি মানুষের ভাবনা একই রকম কোন পরিবর্তন হয় নাই।  

যদি আপনি হিউম্যান বিহেভিয়র দেখতে চান তা হলে চার্ট ধারা এটিকে বুজতে পারবেন। 



চার্ট: সাইডওয়েজ ট্রেন্ড

চলুন আমরা এখন ইমোশান সাইকেল কে বুঝার চেষ্টা করি। যাতে আমরা সহজে বুজতে পারি এক ট্রেড ধারা ট্রেডার কি ভাবে চিন্তা করে। তার মাইন্ডসেট কিভাবে বদলায়। তার বিহেভিয়র কিভাবে বদলায়। 

এটার শুরু হয়  মার্কেট না হাই বা না লো তে।  মার্কেট একদম শান্ত আছে।  আমার বলতে পারি মার্কেট ট্রেন্ড সাইডওয়েজে আছে।  ট্রেডার এ সাইডওয়েজ ট্রেন্ডের পরবর্তী ট্রেন্ড আসার জন্য অপেক্ষা করে।  ট্রেডার ভাবে সাইডওয়েজের পর লম্বা বুলিশ ট্রেন্ড চলবে  অথবা লম্বা বিয়ারিশ ট্রেন্ড চলবে। ট্রেডার এ সাইডওয়েজ ট্রেন্ডে কোন ট্রেড নেয়না।  এ সাইডওয়েজ ট্রেন্ডকে ট্রেডার এভোয়েড করে। কারন ট্রেডার এর ধারণা নাই এ সাইডওয়েজ ট্রেন্ডের পর কোন ট্রেন্ড শুরু হবে। ট্রেন্ড বুলিশ হতে পারে আবার বিয়ারিশ হতে হতে পারে।  



চার্ট: আশাবাদী

আশাবাদী : ব্রেকআউট হবার সময় 
সাইডওয়েজ ট্রেন্ডের পর মার্কেট ব্রেকআউট হয়ে  বুলিশ ট্রেন্ড শুরু হয়। মার্কেট তেজি হওয়া শুরু হতে যাচ্ছে।  এরকম মনে হতে থাকে।  এ ব্রেকআউট দ্বারা শুরু হতে থাকে ট্রেডারের ইমোশান সাইকেল।এখানে প্রথম যে ইমোশান আসে সেটি হল আশাবাদ ।  
যখন চার্টে ব্রেকআউট হয় আর প্রাইস উপরের দিকে যেতে থাকে থখন ট্রেডারের মনে আশাবাদ শুরু হতে থাকে।  এসময় ট্রেডার ওয়েট এন্ড ওয়াচ অবস্থায় থাকে।  এসব ট্রেডের ভাবে প্রাইস আর একটু উপর যাক তারপর একটু স্লো হলে বাই করব। 



চার্ট :উত্তেজনা

উত্তেজনা: 

মার্কেট ব্রেকআউট হবার পর বড় বড় কেন্ডেল তৈরী করে উপরে যেতে থাকে তখন ট্রেডারের বিশ্বাস আরো বাড়তে থাকে।  উত্তেজনাও  বাড়তে থাকে। তখন ভাবতে থাকে শেয়ারে ভালো মোমেন্টাম চলে আসছে। এখন শেয়ারের উপরের দিকে যাওয়া পুরাপুরি সহজ।  



চার্ট : শিহরিত বা রোমাঞ্চিত হওয়া 


 শিহরিত বা রোমাঞ্চিত হওয়া: 

এখানে ট্রেডার যে রকম অনুমান করে ঠিক সে রকম ঘটে।  শেয়ারের দাম বেড়ে যাচ্ছে।  আর এটা দেখে ট্রেডার শিহরিত বা রোমাঞ্চিত হয়ে যাচ্ছে।  ট্রেডার ভাবে আর দেরি করা ঠিক হবে না।  যখন শেয়ারের দাম নিচে আসবে সুযোগ বুজে এটি কিনে নিব।  

চার্ট : অতি উৎসাহ  


 অতি উৎসাহ : 

অনেক সময় শেয়ারের প্রাইস এত দ্রুত বাড়তে থাকে নিচে নামতে চায়না। দাম উপরের দিকে যেতে থাকে। প্রাইস নিচে আসার জন্য প্রস্তুত না।  এ পরিস্তিতিতে ট্রেডারের হয়ে যায় ট্রেডিং ফোমো অর্থাৎ ট্রেড ছুটে যাবার ভয়। ট্রেডার ভাবে  এ ট্রেড না জানি আমার মিস হয়ে যায়। তখন ভাবে যে প্রাইস এ শেয়ার পাবো ওই প্রাইস এ শেয়ার কিনে ফেলি।  আর অতি উৎসাহে ট্রেডার শেয়ার বই করে ফেলে।



                                                             চার্ট : চিন্তা 

 চিন্তা  : 

ট্রেডার বাই করার পর শেয়ারের দাম কমে গেলো।  যার কারণে ট্রেডারের টেনশন শুরু হতে লাগে।  তখন চিন্তা করে আমি কি তাড়াতাড়ি করে ফেললাম নাকি।  আবার এটাও ভাবে কিছুক্ষন পর শেয়ার এর দাম উপরে উঠে যাবে।  আমার কিছুক্ষন অপেক্ষা করতে হবে।  


চার্ট : অস্বীকার 

 অস্বীকার  : 
ট্রেডার এ সময় এটি ভাবে কিবে এটি হতে পারে আমি বুজতেছিনা। এত ভালো বুলিশ মুভ ছিল হটাৎ কি হল। মনে হয় কোন নিউজ আসছে যার জন্য প্রাইস কমে যাচ্ছে।  আমার অপেক্ষা করা লাগবে। যখনি নিউজের প্রভাব কমে যাবে তখন প্রাইস উপরে উঠে যাবে। ট্রেডের ভাবে যে শেয়ার উপর উঠে সেটি নিচে নাম আবার যেটি নিচে নামে সেটি উপর উঠে।  তো আমার বেশি চিন্তা করা উচিত না।  প্রাইস কোন এক জায়গায় সাপোর্ট নিয়ে উপরে যাবে।  




চার্ট : ভয় 
ভয় : 
ট্রেডার ভাবতে থাকে আমার টাকা সব শেষ হয়ে না যায় । এখন তো লস অনেক হয়ে গেছে।  যে ভাবে প্রাইস নিচে আসতেছে মনে হচ্ছে প্রাইস আরো নিচে নেমে যাবে।  আমি আরো একটু দেরি করি যদি কোন পজিটিভ নিউজ এসে যায়।  যদি কিছু হয়ে যায়। যদি প্রাইস উপর চলে যায়। ট্রেডার ভাবতে থাকে না জানি আমাকে এত বড় লস নেয়া লাগে ।  



চার্ট : নিরাশা /হতাশা
 নিরাশা /হতাশা : 
ট্রেডার ভাবতে থাকে এখানেতো আগের লো এর চেয়ে লো তৈরী হচ্ছে।  এটা তো এখন সব সাপোর্ট ভেঙে ফেলছে।  এখন তো লস থেকে বাঁচার কোন রাস্তা দেখা যাচ্ছে না। আমার আরো আগে ট্রেড থেকে বের হয়ে যাওয়া উচিত ছিল।  আমার স্টপলস নেয়া উচিত ছিল।  মনে হচ্ছে অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে। আমার সাথে কেন এমন হয়।  আমি এন্ট্রি নেবার সাথে প্রাইস কেন কমতে থাকে।  যা হবার হোক।  আমার ভাগ্যে লস আছে আমি কি করব।  আমি এখানে লস নিলে যদি প্রাইস এখন থেকে বাড়তে থাকে। না আর একটু দেখি। 



চার্ট : আতঙ্কিত 
আতঙ্কিত  : 
এখানে ট্রেডার এটা ভাবতে থাকে সব তো শেষ হয়ে গেছে। কয়েক মাসের জন্য ভালো খবর আর আসবে না।  আমার তো আমার অনুমানের চেয়ে অনেক বেশি লস হয়ে গেছে।  বাজারে সবার লস হচ্ছে।  এখন আমার উচিত আমার লস নিয়ে নেয়া। না আর একটু অপেক্ষা করি ভালো হতে পারে।   




চার্ট : আত্মসমর্পণ  
 আত্মসমর্পণ    : 
এখানে ট্রেডার মনে করেন অনেক হয়েছে মার্কেট পাগলা ষাঁড়ের মত নিচে নামছে।  এখানে ক্রমাগত প্রাইস নিচে যাচ্ছে।  মনে হচ্ছে বিয়ারিশ ট্রেন্ড শুরু হয়ে গেছে।  এটা আমার বুজতে দেরি হয়েছে।  আমি ট্রেড থেকে বের হয়ে যাবো।  এর থেকে বেশি লস আমি নিতে পারব না।  এমনিতে লস অনেক বেশি হয়ে গেছে।  এখন ট্রেড ক্লোজ করলে আরো লস হবার থেকে বেঁচে যাব।  প্রাইস যেখানে যাবার যাক আমি ট্রেড থেকে বের হয়ে যাবো।  এ পজিশনে এসে ট্রেডার অনেক বড় লস নিয়ে নেয়। এ সময় ট্রেডার আত্মসমর্পণ করে ট্রেড কে ক্লোজ করে দেয়।     


চার্ট : বিষণ্ণতা  
 বিষণ্ণতা : 
এ সময় ট্রেডার হতাশ হয়ে বিষণ্ণতায় ভুগতে থাকে।  তার কাছে খুব খারাপ লাগতে থাকে।  ভাবতে থাকে আমি ওই সময় এন্ট্রি নিয়েছি যখন সব ইকোনোমি খারাপ।  কোম্পানির আর্থিক অবস্থা খারাপ।  মার্কেটের সব লোকের টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে।  আমি এক ট্রেড নিয়েছি আর এত বড় লস হয়েছে। ততক্ষন আমি আর কোন  ট্রেড করবো না যতক্ষন মার্কেটের বুলিশি ট্রেন্ড শুরু না হয় আর ফান্ডামেন্টাল অবস্থা মজবুত না হয়।  আমার অনেক লস হয়েছে। আমার ট্রেড নেবার আগে কোন বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নেয়া উচিত।    

চার্ট : অপরাধী /দোষী  
 অপরাধী /দোষী  : 
এ সময় ট্রেডার ভাবে এটা কি হল মার্কেট আমাকে বেকুব বানাল।  আচানক বাজার কেন বাড়তে লাগল। এখনই তো এত এত খারাপ খবর আশা শুরু করল।  বাজার তো নিচে যাচ্ছিল আচানক কি হয়েছে।  বাজার উপরে যাওয়া শুরু করল কেন।  মনে হচ্ছে আমি শুধু শুধু ট্রেড থেকে বের হয়ে গেছি।  যদি আর একটু অপেক্ষা করতাম তা হলে ভালো হত।  আমার এখন খুব খারাপ লাগতেছে।  ইস যদি আমি আর একটু অপেক্ষা করতাম।      

চার্ট : আশা 
 আশা  : 
এ সময় ট্রেডার এর আশা বাড়তে থাকে এখন মার্কেট ভালো হতে পারে ।   কিন্তু প্রাইস এখনও ওই লেভেলে আসে নাই যেখান থেকে প্রাইস বুলিশ ট্রেন্ডে যাবে। ট্রেডারের মনে হতে থাকে আগের ট্রেডের মত আবার ঐ রকম হয়ে না যায়।  ট্রেডার ভাবতেছে আমি ট্রেড অবশই করব কিন্তু এখন নয়।  আবার আমি সঠিক সময় আর সঠিক দামের জন্য অপেক্ষা করব।  যখন প্রাইস উপর যেতে লাগবে তখন আমি এন্ট্রি নিব।  আবার আর কোন তাড়াহুড়া করব না।     

চার্ট :ত্রাণ 
ত্রাণ   : 
এ সময় ট্রেডার এমন লাগে যে মার্কেট এখন উপরে যাচ্ছে । এখন বিয়ারিশ ট্রেন্ড শেষ হয়ে গেছে।  আর বাজারে ভালো ভালো আশা শুরু করছে।  এখন ফান্ডামেন্টাল মজবুত হতে লাগছে।  মার্কেটে যে ভাবে খবর আসতেছে মনে হয় খুব দ্রুত এন্ট্রি নিতে হবে।  আর এ ট্রেডে আমি আগের ট্রেডের লস পুষিয়ে নিব।         

এরপর ট্রেডার আবার আশাবাদী  হয়ে উঠে। এ ভাবেই মার্কেটে একজন ট্রেডারের ইমোশান সাইকেল চলতে থাকে।  

যদি আপনি এ ইমোশান সাইকেল থেকে বের হতে চান তাহলে আপনাকে কিছু জিনিস খু মনোযোগের সাথে পালন করতে হবে।  আপনি আপনার জন্য যে ট্রেডিং প্ল্যান বানিয়েছেন তাকে পুরা বিশ্বাসের সাথে মানতে হবে এবং পালন করতে হবে।  এখন দেখুন আপনি কিভাবে লো রিস্ক আর ইমোশান লেস কিভাবে ট্রেড করতে পারবেন।  
১. এনালাইসিস : 
আপনি টেকনিক্যাল এনালাইসিস করতে পারেন।  বা আপনি ফান্ডামেন্টাল  এনালাইসিস করতে পারেন। অথবা আপনি টেকনিক্যাল এনালাইসিস এবং ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস একসাথে  করতে পারেন। ফান্ডামেন্টাল  এনালাইসিস দিয়ে আপনি জানতে পারবেন কোম্পানি কি রকম মজবুত। আর টেকনিক্যাল এনালাইসিস দিয়ে আপনি জানতে পারবেন বুলিশ ট্রেন্ড কখন আসবে আর কোথায় থেকে আসবে ।  আর বিয়ারিশ ট্রেন্ড আসলে কখন আসবে আর কোথায় থেকে আসবে। টেকনিক্যাল এনালাইসিস এবং ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস একসাথে করে 
২. স্টপ লস :
আপনি যে এনালাইসিস করছেন তাতে অবশ্যই স্টপ লস সেট করতে হবে।  হতে পারে আপনার এনালাইসিস ভুল হয়ে প্রাইস নিচে নেমে আসছে।  স্টপ লস লাগানো থাকলে আপনার রিশ কমে যাবে।  স্টপ লস আপনি রিস্ক ম্যানেজমেন্ট এবং মানি  ম্যানেজমেন্ট অনুযায়ী ট্রেড নিয়ে করতে হবে।  

৩. ট্রেডিং প্ল্যান অনুসরণ :
আপনাকে আপনার ট্রেডিং প্ল্যান অনুসরণ করতে হবে।  আপনার ট্রেডিং প্ল্যান অনুসারে আপনাকে এন্ট্রি নিতে হবে। স্টপলস সেট করতে হবে এবং টার্গেট হিসাব করে রাখতে হবে।  আপনি প্রথমে সিদ্ধান্ত নিয়ে রাখতে হবে আপনি ট্রেডের কোথায় স্টপ লস নিবেন এবং কোথায় প্রফিট টেক করবেন। আপনার স্টপ লস হিট করলে সাথে সাথে ট্রেড ক্লোজ করতে হবে।  এখানে ইমোশান কে কোন প্রাধান্য দেয়া যাবে না।  টার্গেট হিট করলে সাথে সাথে প্রফিট বুক করে ফেলতে হবে।  

৪. ইমোশানলেস ট্রেডিং : 
ট্রেডিং এক বিজনেস এখানে ইমোশানের কোন দাম নাই।  আপনার ইমোশান আপনার ট্রেডিংয়ে আপনাকে বিচলিত করবে আপনাকে ধ্বংস করবে । আপনার ট্রেডিংয়ে সফলতার জন্য আপনার ইমোশান কন্ট্রোল রাখতে হবে।  আপনি ইমোশানের একটি লিস্ট যেমন ভয় , রাগ , আতংক , উত্তেজনা , ফোমো বানাতে  পারেন যা ট্রেডিংয়ের সময় আপনার আসে বা আসতে পারে। আপনি ডিসিপ্লিনের সাথে ইমোশান গুলিকে এড়িয়ে যান।  তাতে আপনার সফলতা আসবে।  আপনার ইমোশনকে বলে দেন তোমাকে নিয়ে আমার কোন চিন্তা নাই।  আমি এক ইমোশানলেস ট্রেডার।  আমি আমার প্রফিট লস আমার ট্রেডিং প্ল্যান অনুসারে নিতে চাই।  

৫. নিজে নিজেকে ধন্যবাদ দেয়া :
ট্রেড শেষ করার পর আপনি আপনাকে থাঙ্কস দিন এ জন্য যে আপনি বিনা  ইমোশানে ট্রেডটি শেষ করতে পেরেছেন।  আপনি ট্রেডিং প্লানকে ফলো করেছে।  ট্রেডিং রুলস কে ফলো করেছেন। আপনার প্রফিট বা লস যাই হোক এটা মার্কেটের ট্রেডিং এর অন্তর্ভুক্ত।  আপনার ট্রেড কে আপনি সাদরে গ্রহণ করে নিন যেটাকে আপনি সততার সাথে করেছেন ।  

কম্পিউন্ডিং সিস্টেম ইন মার্কেট : 


ট্রেডিং সাইকোলজির  ২৫ প্রশ্ন : 


পার্ট -১ প্রশ্ন ১২টি :
প্রশ্নের উত্তর কখনো না এর জন্য - ৪ মার্ক 
প্রশ্নের উত্তর বহুত কম  এর জন্য - ৩ মার্ক
প্রশ্নের উত্তর কয়েক বার এর জন্য - ২ মার্ক
প্রশ্নের উত্তর কখনো কখনো এর জন্য - ১ মার্ক
প্রশ্নের উত্তর সব সময়  এর জন্য - ০ মার্ক
১. যখন আপনার ট্রেড ফেল হয় তখন আপনি নিরাশ হয়ে যান কি এবং  আর কিছু সময় আপনি নিজের উপর রাগ হয় নাকি ? 
২. আপনি কি সব সময় প্রফিট, প্রফিট, প্রফিট আরো প্রফিট এরকম ভাবতে থাকেন ? 
৩. আপনি ছোট ছোট জিনিসে টেনশনে পড়ে যান কি ? 
৪. আপনি আপনার টেকনিক্যাল স্কিলের চেয়ে ভাগ্যে বেশি বিশ্বাস করেন ?
৫. রিস্ক ম্যানেজ না করা কি আপনার অভ্যাস ? এ অভ্যাসকে কন্টোল করা আপনার কাছে খুব কঠিন মনে হয় ?
৬. আপনি কি আপনার ট্রেডিংয়ে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি প্রফিট হলে  আপনি খুশি হন?
৭. আপনার অনেক টাকার প্রয়োজন যেটি আপনার ট্রেডিংয়ের দ্বারা করা সম্ভব এটা আপনার মনে  হয় ?
৮. রুলস ফলো করা আপনার পছন্দ না রুলস না মেনে আপনি আপনার মন মতো ট্রেড করা পছন্দ করেন ?
৯. যদি আপনার ট্রেড আপনার মনের মত না হয় সেটার দশ আপনি মার্কেটকে দিয়ে থাকেন ? 
১০. আপনার  ইমোশনে চলে আসে ?
১১. অসফলতার জন্য নিজেকে দোষী সব্যস্ত করে দীর্ঘ্য সময় নিয়ে চিন্তিত থাকেন। 
১২. আপনার ট্রেড ফেল হবার পর বা স্টপলস হিট করার পর আপনার টেকনিক্যাল এনালাইসিস থেকে ভরসা উঠে যায় ? 

পার্ট -২ প্রশ্ন ১৩টি :
প্রশ্নের উত্তর সব সময়  এর জন্য - ৪ মার্ক
প্রশ্নের উত্তর কখনো কখনো এর জন্য - ৩ মার্ক
প্রশ্নের উত্তর কয়েক বার এর জন্য - ২ মার্ক
প্রশ্নের উত্তর বহুত কম  এর জন্য - ১ মার্ক
প্রশ্নের উত্তর কখনো না এর জন্য - ০ মার্ক 

১. ট্রেডিংয়ের দ্বারা আপনি কনফিডেন্স হন ?
২. আপনি কি পরিশ্রম করা পছন্দ করেন ?
৩.আপনি কি এক প্রাকৃতিক ভাবে আশাবাদী বেক্তি ? আপনি জীবনকে কি পজিটিভলি দেখেন ?
৪.সমস্যাকে আপনি সমাধান করতে পারেন ?
৫. আপনার এমন মনে হয় ট্রেডিংয়ে সফল হবার জন্য আপনার নেয়া  ডিসিশান এর পরিনাম  শিকার করার জিম্মাদারি আপনার। 
৬. আপনার যে পছন্দ হয় সেটা আপনি ঘন্টা  পর্যন্ত মনোযোগ দিতে পারেন। 
৭. আপনি মনে করেন ট্রেডার তার অসফলতা থেকে শিখতে পারে। 
৮. চেলেন্জিং  পরিস্তিতির মধ্যে আপনার কাজ করতে ভালো লাগে আর সব সময় নতুন কিছু শিখা হয় । 
৯. যখন আপনি ট্রেডিং করেন তখন আপনার মনে এ চিন্তা স্পষ্ট হয় ট্রেড থেকে কখন এবং কিভাবে বের হওয়া যায়। 
১০. আপনার মনে হয় ট্রেডিংয়ে সফল হবার জন্য রিস্ক মেনেজমেন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ চাবি ।   
১১. মার্কেটে ইনকাম করার জন্য প্রতি দিন কোন না কোন সুযোগ মিলে এ রকম আপনার মনে হয় । 
১২. আপনি মার্কেট সম্পর্কের জানার জন্য অর্থনৈতিক নিউজপেপার এবং  বই পড়েন।  
১৩. আপনি আপনার সব ট্রেডের সমস্ত তথ্য এবং অভিজ্ঞতা একটি ডায়রিতে লিখে রাখেন। 

এ ২৫ প্রশ্নের উত্তরের নম্বর যদি ৭৬-১০০ এর মধ্যে হয় তা হলে আপনি গ্রুপ এ  এর মধ্যে।  যদি আপনার নম্বর ৫১-৭৫ এর মধ্যে হয় তা হলে আপনি গ্রুপ বি  এর মধ্যে।  যদি আপনার নম্বর ২৬-৫০ এর মধ্যে হয় তা হলে আপনি গ্রুপ সি   এর মধ্যে।  যদি আপনার নম্বর ০-২৫ এর মধ্যে হয় তা হলে আপনি গ্রুপ ডি    এর মধ্যে।  

কোন গ্রুপের কি মানি 
গ্রুপ এ  - ট্রেডিংয়ে সফল হবার সব গুণ আপনার মধ্যে আছে। আপনার ইচ্ছা শক্তি অনেক মজবুত।  ট্রেডিংয়ে আশা যে কোন সমস্যা আপনি সহজে সমাধান করতে পারবেন।  এক সফল ট্রেডার হবার মাইন্ডসেট আপনি তৈরী করে নিয়েছেন।  
গ্রুপ বি  - আপনি একজন এভারেজ ট্রেডার।  ট্রেডিংয়ে আপনি সফলতা মিলবে এ ধারণা আপনার এখনো কম।  ট্রেডিংয়ে সফল হবার জন্য আপনাকে আরো মেহনত করতে হবে।  আমার সাইকোলজি এবং মাইন্ডসেট কে আরো পরিবর্তন করতে হবে।  ট্রেডিং করার জন্য আপনাকে আরো স্কিল ডেভেলপ করতে হবে।  
গ্রুপ সি - আপনি লসে আসলে বার ট্রেডিং ভুল হলে আপনার অনেক টেনশন চলে আসে।  যার ধারা আপনি ট্রেডিংয়ে ডিসিপ্লিন রাখতে পারেন না। আপনি ট্রেডিং রুলস কে সঠিক বলে ফলো করতে পারেন না।  আপনার ট্রেডিং করার চিন্তা না করে উচিত। যদি আপনি ট্রেডিংয়ে সফল হতে চান তাহলে আপনাকে অনেক পরিশ্রম করতে হবে।  আপনাকে রোজ ১০০ চার্ট এনালাইসিস করতে হবে।  যদি আপনি পরিশ্রম করতে প্রস্তুত থখন আপনি ট্রেডিং করার চিন্তা করবেন।  আপনাকে কিছুদিন পেপার ট্রেডিং করা লাগবে।  

গ্রুপ ডি  - আপনি এ পরিস্তিতিতে ট্রেডিং করতে পারবেন না।  ট্রেডিংয়ে সাকসেস হওয়া আপনার জন্য কঠিন। এ সময় আপনি ট্রেডিং থেকে যতদূরে থাকবেন ততই আপনার জন্য মঙ্গল।    





No comments:

Post a Comment